তালতলী প্রতিবেদক ॥ (১২ জুন) বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস, বরগুনার তালতলী উপজেলার বিভিন্ন সড়কে দেখা মিলে অনেক শিশু অটোগাড়ি চালক। নতুন করে দেখা মিলে ১০ বছর বয়সী এক অটোরিক্সা চালকের। নাম তার ইমন, কথা হয় ইমনের সাথে, তার বাবা অসুস্থ হয়ে বিছানায়। তাই সংসারের হাল ইমনেরই ধরতে হয়। করোনা ভাইরাসের কারনে স্কুল বর্তমানে বন্ধ। তাই গাড়ি চালিয়ে যে টাকা পাই, তা দিয়েই কোনরকম খেয়ে দিন কাটে তার পরিবারের ।
শিশু বয়সেই বড় দায়িত্ব ইমনের কাঁধে। যে সময়টায় সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলে-খেলাধুলায় কাটানোর কথা, সে বয়সেই পরিশ্রম করতে হচ্ছে। প্রতিদিন রোজগারের চিন্তায় গাড়ি নিয়ে পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে। উপজেলার ঠংপাড়া এলাকার নসু মৃধার বাড়ির পাশেই ছোট্ট ঘরে বাবা-মা কলেজ পরুয়া মেঝ বোন এবং তিন বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে বসবাস করেন ইমন । বর্তমানে ছাতন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ইমন রোল নং (১৫)। ইমন জানায়, তাদের পুরাতন বাড়ি বরগুনা জেলার পরীর খাল এলাকায়। মেঝবোন সাথী ও ইমনের লেখাপড়ার জন্য বাবার এখানে থাকা। সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী বাবাই ছিল, কিন্তু বাবা কিছু দিন আগে অসুস্থ হলে, মায়ের পক্ষে কাজ করে তিনবেলা খাওয়া, পড়াশুনার খরচ চালানো সম্ভব না। তাই বসে না থেকে বাবার গাড়ি নিয়ে উপার্জনে নেমেছে। পড়াশুনা করে কোনো একটা চাকরি করা সম্ভব, তাই শত কষ্ট হলেও স্কুল খুলে দিলে লেখা পড়া চালিয়ে যাবে।
ইমন আরও জানায়, সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ইনকাম হয়। টাকা মায়ের কাছে তুলে দেই সে টাকা দিয়ে তেল-নুন, চাল-ডাল কেনা হয়। লোডশেডিং হলে গাড়ি চালাতে না পারলে কখনো আবার সবাইকে না খেয়েও কাটাতে হয়। ইমন আরও জানায়, গাড়ি চালাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই অনেক যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ব্যবহার ও শিকার হতে হয়। আবার অনেকে আদর ও করে ভালো ব্যবহার করে। কোমলমতি এই শিশুটি তার পরিবার সহ বেঁচে থাকার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, তার নিজের জীবন নিয়ে ভাবনা আছে, দায়িত্ব আছে তার পরিবারের , তাই তো তাকে রোজগারের জন্য ছুটতে হয়। সংসারের টানাপোড়নে তার এই স্বপ্ন হারিয়ে যাবে নাতো? ইমনের লেখাপড়া যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেই জন্য সমাজের নজর রাখা।
Leave a Reply